চিত্র: আলফালফা ঘাস
আলফালফা ঘাসকে অনেক দেশে "পশু খাদ্যের রাণী" বা "ঘাসের রানী" বলা হয়ে থাকে। গরু ছাগলের জন্য অলফালফা ঘাস অনেক জনপ্রিয় ঔষধি ঘাস হিসেবে বিশ্বব্যাপি পরিচিত। গ্রামাঞ্চলে পিয়াজ, রসুন, গম প্রভৃতির জমিতে আগাছা হিসেবে দেখা যায় এই ঘাসের দেশি জাত। তবে খামারের জন্য উন্নত হাইব্রিড বীজ ব্যাবহার করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে আমেরিকান ও ইন্ডিয়ান জাতের আলফালফা জাতের ঘাস বেশি চাষ হয়ে থাকে।
আলফালফা ঘাসের মাটি
- ভেজা দোয়াশ মাটি বা কাদা মাটি এই ঘাস চাষের জন্য সর্বাধিক উপযোগি। তবে কোনো ভাবেই পানি জমে থাকা যাবেনা। কারণ ২৪ ঘন্টার বেশি সময় ঘাসের গোড়ায় পানি জমে থাকলে ঘাস মারা যায়।
- বেলে-দোআঁশ মাটিতেও বেশ ভাল ফলন হয়।
- উপরোক্ত দুইধরণের মাটিতে ভালো ফলন হলেও এটেল মাটিসহ অন্য সকল ধরণের মাটিতেই আলফালফা ঘাস চাষ করা যায়, তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে, পানি জমে থাকে এমন কোনো জমিতে চাষ করা যাবেনা।
চিত্র: আলফালফা ঘাস
আলফালফা ঘাসের পুষ্টিগুণ:
আলফালফা ঘাসের পুষ্টি উপাদানগুলোকে ৪ভাগে বিভক্ত করে নিচে ছক আকারে দেয়া হয়েছে।
ক্রম. | আলফালফা ঘাসের পুষ্টি উপাদান | %/ ড্রাই ম্যাটার |
১. | ড্রাই ম্যাটার | ২০%/ ড্রাই ম্যাটার |
২. | ক্রুড ফাইবার | ২৭%/ ড্রাই ম্যাটার |
৩. | ক্রুড প্রোটিন | ২১%/ ড্রাই ম্যাটার |
৪. | ক্রুড ফ্যাট | ২.৯%/ ড্রাই ম্যাটার |
৫. | ফাইবার [নিউট্রাল] | ৩৯.৩%/ ড্রাই ম্যাটার |
৬. | ফাইবার [এসিড ডিটারজেন্ট] | ৩১%/ ড্রাই ম্যাটার |
৭. | লিগনিন | ৭.৬%/ ড্রাই ম্যাটার
|
খনিজ উপাদান [ড্রাই ম্যাটার]
ক্রম. | খনিজ উপাদানের নাম | প্রতি কেজিতে পরিমাণ |
১. | ক্যালসিয়াম | ১৯.৫ গ্রাম/কেজি |
২. | পটাসিয়াম | ২১.৩ গ্রাম/কেজি |
৩. | ফসফরাস | ২.৫ গ্রাম/কেজি |
৪. | ম্যাগনেশিয়াম | ২.৮ গ্রাম/কেজি |
৫. | সোডিয়াম | ০.৫ গ্রাম/কেজি |
৬. | আয়রন | ৩৮৭ মি.গ্রা./কেজি |
৭. | ম্যাঙ্গানিজ | ৭৬ মি.গ্রা./কেজি |
৮. | জিংক | ৪৩ মি.গ্রা./কেজি |
৯. | কপার | ১৩ মি.গ্রা./কেজি |
এ্যামাইনো এসিডের পরিমাণ
ক্রম. | নাম | %/ ক্রুড প্রোটিন |
১. | লাইসিন | ৫.৫%/ ক্রুড প্রোটিন |
২. | অর্গানাইন | ৬.৪%/ ক্রুড প্রোটিন |
৩. | ভ্যালাইন | ৬.৪%/ ক্রুড প্রোটিন |
৪. | হিস্টিডাইন | ২.০%/ ক্রুড প্রোটিন |
৫. | মেথিওনিন | ১.৬%/ ক্রুড প্রোটিন |
৬. | থ্রিওনাইন | ৪.১%/ ক্রুড প্রোটিন |
আলফালফা ঘাসের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:
এছাড়াও কয়েকটি খারাপ উপাদান রয়েছে যেমন: ফাইটোস্ট্রজেন, ব্লোটিং এজেন্ট ও স্যাপনিন। তবে এদের পরিমাণ খুবি সামান্য হয়ে থাকে, যা গবাদি পশুর কোনো ক্ষতি করেনা। কিন্তু মাত্রাতরিক্ত এই ঘাস প্রতিদিন খাওয়াতে থাকলে পেট ফাপা/ গ্যাস্টিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও এই ঘাস খাওয়ালে গরু/ ছাগলের গর্ভ ধারণে সমস্যা দেখা দেয়। তাই গরুর গর্ভধারণ বা সিমেনের ২ সা্তাহ আগে ও পরের ২ সাপ্তাহ এই খুবি কম পরিমাণে খাওয়াতে পারবেন। বেশি খাওয়ালে গর্ভধারণ করতে পারবেনা।
চিত্র: আলফালফা ঘাস